আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় মুসলিম ভাই বোনেরা স্বাগত জানাচ্ছি আজকের এই নতুন আর্টিকেলে ।
আজকের আর্টিকেলের বিষয় :
জুময়ার নামাজ কি
জুময়ার নামাজ কার উপর ফরজ
জুময়ার নামাজ কার উপর ফরজ নয়
জুময়ার নামাজের নিয়ত ও বাংলা উচ্চারণ সহ
এইছিল শিরোনাম এবার নিছে বিস্তারিত ।
আশা করি সকলে পড়বেন সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ।
![]() |
জুময়ার নামাজ কার উপর ফরজ |
জুময়ার নামাজ কি
জুমার নামাজ (আরবি: صَلَاة ٱلْجُمُعَة সালাত আল-জুমুআহ, "শুক্রবারের সালাত") ইসলামের অন্যতম একটি নামাজ। جُمُعَة (জুমুআহ) শব্দটি আরবী । এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া । যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামায়াতের সাথে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরযরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে "জুমার নামাজ" বলা হয়।
জুমার নামাজ ফরজ হওয়ার জন্য শর্ত
নিম্নোক্ত শর্তগুলো পূর্ণরূপে পাওয়া গেলে জুমা ফরজ হবে
'
১. পূরুষ হওয়া, মহিলার উপর জুমা ফরজ নয় ।
২. স্বাধীন হওয়া , দাসের উপর জুমা ফরজ নয়
৩. শহরের বা শহরের হুকুমে পড়ে এমন স্থানের মুকিম হওয়া
৪. সুস্থ্য হওয়া, রুগ্ন ব্যাক্তির উপর জুমা ফরজ নয়
৫. নিরাপদ হওয়া, জুলুম অত্যাচারের ভয় থাকলে তার উপর জুমা ফরজ নয়
৬. দৃষ্টি শক্তি থাকা, অন্ধের উপর জুমা ফরজ নয়
৭. হাটা চলার শক্তি থাকা, চলা-ফিরায় অক্ষম ব্যাক্তির উপর জুমা ফরজ নয়
'
যাদের উপর জুমা ফরজ/ওয়াজিব নয়, তারা আদায় করলেও শুদ্ধ হবে, জোহরের নামাজ আদায় করতে হবে না। বরং তাদের জন্য জুমা মোস্তাহাব।
'
মহিলাগণ ঘরের মধ্যে জোহরের নামাজ আদায় করবে, তারা জুমায় উপস্থিত হওয়া নিষেধ।
الفقه الميسر.
জুম’আর নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ
আরো পড়ুন > আশুরা কত তারিখে - আশুরার রোজার ফজিলত
জুময়ার নামাজ কত রাকাত
শুক্রবার পবিএ জুমা’র দিন তথা মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন । এই দিনে যোহরের নামাযের পরিবর্তে দুই রাকাত জুমার নামায আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরজ। অন্য নামায যারা পড়ে না তারাও জুমার নামায পড়ে থাকেন। তাই হয়তো অনেকেরই অজানা আসলে জুমার নামায কতো রাকাত পড়া উচিত। চলুন জেনে নেই জুমার নামাজের রাকাত সংখ্যাঃ
দুই-রাকাত তাহিয়্যাতুল অযু
দুই-রাকাত দুখুলুল মাসজিদ
চার-রাকাত কাবলাল জুমআ
দুই-রাকাত ফরয
চার রাকাত বা'দাল জুম'আ
দুই-রাকাত সুন্নাতুল ওয়াক্ত
জুময়ার নামাজ পড়ার নিয়ম
জুমার নামাজে দুই রাকাত ফরজ রয়েছে। এছাড়া ফরজ নামাজের পূর্বে চার রাকাত কাবলাল জুমা এবং পরে চার রাকাত বাদাল জুমা (সুন্নত নামাজ) আদায় করতে হয়। জোহরের নামাজের মতো ব্যক্তি চাইলে এসময় অতিরিক্ত নফল নামাজ আদায় করতে পারে। তবে এসকল নফল নামাজ জুমার অংশ হিসেবে পড়া হয় না এবং তা আবশ্যকীয়ও নয় বরং ব্যক্তি তা স্বেচ্ছায় করতে পারে এবং না করলে তার দোষ হয় না।
জুমার নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা আবশ্যিক এবং তা একাকী আদায় করার নিয়ম নেই। কুরআনে জুমার নামাজের সময় হলে কাজ বন্ধ করে নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার প্রতি তাগিদ দেয়া হয়েছে[৪]। তবে কোনো ব্যক্তি যদি যুক্তিসঙ্গত কারণবশত (যেমন খুব অসুস্থ ব্যক্তি) জুমা আদায় করতে না পারে তবে তার ক্ষেত্রে জোহরের নামাজ আদায় করা নিয়ম। তাছাড়া কিছু ক্ষেত্রে সুস্থ ব্যক্তির উপর, যেমন ভ্রমণকারী (মুসাফির) অবস্থায় জুমার আবশ্যকতা থাকে না এবং সেক্ষেত্রে জোহরের নামাজ আদায় করলে তা গ্রহণীয় হয়। তবে ভ্রমণকারী চাইলে জুমা আদায় করতে পারে।
জুমআর নামাযের নিয়ত সমূহ
দুই-রাকাত তাহিয়্যাতুল অযু নামাজের নিয়ত
তাহিয়্যাতুল অযু নামাজের নিয়ত
আরবি-উচ্চারণঃ
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ التَّحِيَّةُ الْوُضُوْءِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
তাহিয়্যাতুল অযু নামাজের নিয়ত বাংলা
অর্থ: আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে দুই-রাকাত তাহিয়্যাতুল অযু নামাজ আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।
দুই-রাকাত দুখুলুল মাসজিদ নামাযের নিয়ত
আরবি-উচ্চারণঃ
দুখুলুল মাসজিদ নামাজের নিয়ত
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الدُّخُوْلِ الْمَسْجِدِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
দুখুলুল মাসজিদ নামাজের নিয়ত বাংলা
অর্থ: আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে দুই-রাকাত দুখুলুল মাসজিদ নামাজ আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।
চার-রাকাত কাবলাল জুমআর নামাযের নিয়ত
আরবি-উচ্চারণঃ
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى اَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلَوةِ قَبْلَ الْجُمُعَةِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
অর্থঃ আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে চার রাকাত কাবলাল জুমা’ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাযের নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবার।
জুমআর দুই-রাকাত ফরয নামাযের নিয়ত
আরবি-উচ্চারণঃ
نَوَايْتُ اَنْ اُسْقِطََ عَنْ ذِمَّتِىْ فَرْضُ الظُّهْرِ بِاَدَاءِ رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْجُمُعَةِِ فَرْضُ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
সালাতুল জুময়ার ফরজ নামাজের নিয়ত
অর্থঃ আমার উপর যোহরের ফরজ নামায আদায়ের যে দায়িত্ব রয়েছে, আমি কিবলামুখী হয়ে, জুমা’র দুই রাকাত ফরজ নামায আদায়ের মাধ্যমে তা পালনের নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবার।
চার রাকাত বা'দাল জুম'আর নামাযের নিয়ত
আরবি-উচ্চারণঃ
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى اَرْبَعَ رَكَعَاتِ صَلَوةِ بَعْدَ الْجُمُعَةِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
অর্থঃ আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহ্র ওয়াস্তে চার রাকাত বা'দাল জুমা'র সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাযের নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবার।
*** দুই-রাকাত সুন্নাতুল ওয়াক্তঃ
আরবি-উচ্চারণঃ
نَوَايْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلَّّهِ تَعَالَى رَكْعَتَىْ صَلَوةِ الْوَقْتِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللَّهِ تَعَالَى مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ
অর্থঃ আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে দুই-রাকাত সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায আদায় করার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।
এই ছিল আজকের আর্টিকেল । সবাইকে পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
আরো পড়ুন : জুময়ার নামাজের বিশেষ আমল
আরো পড়ুন : সুনামগঞ্জ এর ইতিহাস ঐতিহ্য