ঈদুল আযহা কী ।কুরবানীর ঈদ কী। কোন কোন পশু দিয়ে কুরবানী জায়েয ।ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত ।

আসসালামুআলাইকুম
ঈদ মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর দু'টি ঈদ উদযাপন করে। ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। বছরে দুই বার ঈদের নামাজ পড়ার কারণে অনেকেই নামাজ পড়ার নিয়ম ভুলে যান। তাই সামনে যেহেতু ঈদুল  আযহার আসছে তাই আজকের পোস্টে ঈদুল আযহার  নামাজের নিয়ত ও নিয়ম এবং কুরবানীর নিয়ম সমস্ত বিষয় নিছে তুলে ধরা হলো-।
eidul adha


ঈদুল আযহা কী

কুরবানীর ঈদ কী 


ঈদুল আযহা মূলত আরবি বাক্যাংশ। এর অর্থ হলো ‘ত্যাগের উৎসব’।
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুটো ধর্মীয় উৎসবের দ্বিতীয়টি হচ্ছে ঈদুল আযহার তথা কুরবানির ঈদ।  

জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ পশু জবাইয়ের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে যে আনন্দ ফুর্তি করা হয় তাকে ঈদুল আযহা বলা হয় ।

কুরবানী  কি kurbani ki


আরবী ‘কুরবান’ শব্দটি ফারসী বা উর্দুতে ‘কুরবানী’ রূপে পরিচিত হয়েছে, যার অর্থ ‘নৈকট্য’। পশু কুরবানীর মাধ্যমে মনের পশুকে কুরবানী করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। ১০ ই জিলহজ্জ ঈদের নামাজের পর থেকে ১২ ই জিলহজ্জ সূর্যস্ত পর্যন্ত কুরবানী করা যায়। তবে প্রথম দিন করা উত্তম।


কোন কোন পশু দিয়ে কুরবানী জায়েয 


কুরবানীর সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে পশু ক্রয় করা। কুরবানির পশু সুঠাম, সুন্দর ও নিখুঁত হওয়া চাই। তাই পশু কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই যাচাই বাছাই করে ক্রয় করতে হবে। kurbanir poshu
১. উট
২. গরু
৩. মহিষ
৪. ছাগল
৫. ভেড়া এবং
৬. দুম্বা
এ ছয় প্রকারের পশু ব্যতীত অন্যকোন পশু দিয়ে কুরবানী করলে তা জায়েয হবে না।

ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত 


نويت أن أصلي لله تعالى ركعتـى صـلـواة عيد الأضحى مع ست تـكـبـيـرات واجـب الـلـه تـعـالـي اقـتـديـت بهـذا الامـام مـتـوجـها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر
ঈদুল আযহার নামাজের বাংলা নিয়ত:

ঈদুল আযহার ২ রাকাআত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি... আল্লাহু আকবার।

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম



প্রথম রাকাআত১. তাকবিরে তাহরিমাঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা 'আল্লাহু আকবার' বলে হাত বাঁধা।২. ছানা পড়া'সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।৩. অতিরক্তি ৩ তাকবির দেয়া।এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেয়া এবং তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেধেঁ নেয়া।৪. আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া৫. সুরা ফাতেহা পড়া৬. সুরা মিলানো। অতপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সেজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাআত শেষ করা।

দ্বিতীয় রাকাআত১. বিসমিল্লাহ পড়া২. সুরা ফাতেহা পড়া৩. সুরা মিলানো।৪. সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেয়া। প্রথম রাকাআতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেয়া অতপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা।৫. তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।৬. সেজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।


তারপর খুতবাঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবে।






ঈদের দিনের সুন্নত ও মোস্তাহাব আমল 



* ভোরে উঠে নিজ এলাকার মসজিদে ফজর নামাজ জামাতে আদায় করে দৈহিক ও মানসিকভাবে ঈদের নামাজ আদায় করার প্রস্তুতি গ্রহণ করা।

* মিসওয়াক করাসহ ভালোভাবে গোসল করা।

* সুগন্ধি ব্যবহার করা।

* সাধ্যানুযায়ী সুন্দর, পবিত্র ও উত্তম পোশাক পরিধান করা।

* সাদকাতুল ফিতর যার ওপর ওয়াজিব তা ঈদের নামাজের পূর্বেই আদায় করা।

* ঈদগাহে যথাশীঘ্র আগে যাওয়া

* সামর্থ্য অনুযায়ী দান-খয়রাত করা।

*ঈদুল আজহায় কোরবানির পর খাওয়া।

* পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া।

* ঈদগাহে এক রাস্তায় যাওয়া এবং অন্য রাস্তায় আসা।

* ধীরস্থিরভাবে ঈদগাহে যাওয়া।

*  ঈদুল আজহার দিন ঈদগাহে যাওয়ার সময়  ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ তাকবিরটি উচ্চস্বরে পড়া মোস্তাহাব।

* চলতে ফিরতে ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ (আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে ও আপনাদেরকে কবুল করুন) -এই বাক্য দ্বারা অপর মুসলমানদেরকে অভ্যর্থনা জানাবে।

* কোরবানি ঈদের দিন যে লোক নিজের পক্ষ থেকে কোরবানি করবে, তার জন্য ঈদের নামাজ ও কোরবানির জন্তু জবেহ করার পর নখ ও লোম কাটা মোস্তাহাব। এতে করে হাজিদের সাথে তার সামঞ্জস্য ঘটে।

এই ছিল আজকের আর্টিকেল ।
ধন্যবাদ সবাইকে সম্পূর্ণ পড়ার জন্য ।



Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form